ময়না তদন্ত সম্পন্ন; পরিচয় মিলেছে নাসির নগরের জঙ্গিদের
মাহমুদ এইচ খান, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বড়হাটে জঙ্গি আস্তানায় নিহত তিন জঙ্গির ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে জঙ্গিদের পরিচয় পওয়া গেছে।
মৌলভীবাজার হাসপাতালের আরএমও পলাশ রায়ের নেতৃত্বে তিন সস্যের একটি মেডিকেল টিম আজ দুপুর ১টায় ময়না তদন্ত শেষ করে।
ময়নাতদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছিল। কমিটিতে ছিলেন, সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট সুব্রত কুমার রায়, জুনিয়র কনসালট্যান্ট আবু ইমরান।
ময়না তদন্ত শেষে পলাশ রায় জানান, ‘লাশগুলো ছিন্নভিন্ন ছিল। তাদের মধ্যে দুই জন পুরুষ ও একজন নারী চিহ্নিত হয়েছেন। নারীর বয়স (৩০)। পুরুষ দুজনের বয়স ৩৮ ও ৪২ বছর। তিনি আরো বলেন, লাশগুলোর শরীরে মোটা তারের টুকরোর মতো ধাতব বস্তু পাওয়া গেছে। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা আআত্মহত্যা করেছে। হাসপাতালে নিয়ে আসার ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা আগেই তাদের মৃত্যু হয় বলে ধারণা করছি। তবে তাদের চেহারা বোঝা যাচ্ছে না । ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রতিটি লাশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছ ’।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০মার্চ) মৌলভীবাজারের নাসিরপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে একই পরিবারে সাত জন নিহত হয়। ময়না তদন্ত শেষে জানা যায়, তাদের শরীরে কোনো গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তারা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মহত্যা করে।
এদিকে জঙ্গি আস্তানায় নিহত ৭ জনের প্রাথমিক পরিচয় মিলেছে। তারা হল, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ডাঙ্গা গ্রামের লোকমান আলী ও তার স্ত্রীসহ ৫ সন্তান। লোকমান হোসেন (৪৫), তার স্ত্রী সিরিনা আক্তার (৩০), বড় মেয়ে আমেনা খাতুন (২১), সুমাইয়া (১২), মরিয়ম (১০), ফাতেমা (৭), খাতিজা (৭ মাস)।
লোকমান আলীর শ্বশুড় ও একই উপজেলার কলাবাড়ি গ্রামের আবু বকর সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়ে ও তার স্বামী সন্তান অনেকদিন ধরে নিঁখোজ ছিল। আমার ধারণা এই লাশগুলো তাদের’। তিনি আরো বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমার মেয়ে ফোন করে তাদের ক্ষমা করে দিতে বলেছিল। আর দেখা হবে না বাবা বলে ফোন রেখে দেয়’।
উল্লেখ্য গত বুধবার (২৯মার্চ) ভোরে বড়হাট এলাকায় একটি বাসায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে খবর পেয়ে বড়হাট এলাকার লন্ডন প্রবাসী সাইফুল ইসলামের বাসায় অভিযান চালায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেখান থেকে একই মালিকের গ্রামের বাড়ি নাসিরপুরেও জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে জানতে পারে পুলিশ। এরপর উভয় এলাকা পুলিশ ঘেরাও করে রাখে। ধারাবাহিকভাবে প্রথমে নাসিরপুর ও পরে বড়হাট আস্তানায় অভিযান চালায় সোয়াট বাহিনী এবং তাদের নির্মূল করে। টানা চার দিনের অভিযান শেষে গতকাল দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট প্রধান মনিরুল ইসলাম জঙ্গি নির্মূলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ